বান্দরবান প্রতিনিধি :: বান্দরবানের প্রায় দেড় শতাধিক বেইলি ব্রিজ মারাত্মক বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। কোথাও কাঠের টুকরো, কোথাও প্লেইনশিট লাগিয়ে জোড়াতালি দিয়ে সচল রাখা হয়েছে এসব ব্রিজ। ফলে ব্রিজগুলো এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। বিপজ্জনক ব্রিজ ভেঙে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বহুবার।
সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ১৯৮০ সালে বান্দরবান জেলার অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে সাতটি উপজেলায় পাহাড়ি ছড়া ও ছোট-বড় গভীর খালের উপর ব্রিজগুলো তৈরি করা হয়েছিল। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকা জেলার ১৫৯টি ব্রিজের মধ্যে ১৪টি বিপজ্জনক ব্রিজ ভেঙে ইতিমধ্যে আরসিসি পাঁকা ব্রিজে রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন করে আরও ৫টি পাকা সেতু তৈরির কাজও চলমান রয়েছে। চালু থাকা বাকি ১৪০টি ব্রিজের অধিকাংশই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
রুমার বাসিন্দা চিংরাউ ম্রো ও দরনিদো ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা পাভেল ত্রিপুরা বলেন, রুমা সড়কের অধিকাংশ বেইলি ব্রিজই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কোথাও পাটাতন খুলে গেছে, কোথাও পাটাতন ভেঙে গর্ত হয়ে গেছে। আবার কোথাও লোহার ফ্রেম ভেঙে সেতুটি একপাশে ডেবে গেছে। তবে কাঠের টুকরো, গাছের খুটি এবং লোহার প্লেইনশিট লাগিয়ে কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে সেতুগুলো সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
রোয়াংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা দৌলমন ত্রিপুরা ও সাথোয়াই অং বলেন, বিপজ্জনক পুরনো বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে মালবোঝাই ট্রাক খাদে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বহুবার। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো ভেঙে পাকা সেতু তৈরির দাবি পার্বত্যবাসীর দীর্ঘদিনের।
বান্দরবানের ট্যুরিস্ট জীপ-মাইক্রো শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল বলেন, মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই ব্রিজগুলো পার হচ্ছেন যাত্রীরা। মালামাল পরিবহন করছে শত শত যানবাহন। তবে পর্যটকবাহী ট্যুরিস্ট গাড়ির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
বিষয়টি স্বীকার করে বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অনেকগুলো ব্রিজই ইতিমধ্যে ভেঙে পাকা আরসিসি সেতু তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি পাকা সেতু তৈরির কাজও চলমান রয়েছে। সবগুলোই পাকা আরসিসি সেতু তৈরির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। তবে পাকা সেতু তৈরি ব্যয়বহুল হওয়ায় বাজেট সংকটে আস্তে আস্তে পর্যায়ক্রমে এগুতে হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: